মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ইন্দোনেশিয়ায় ফের বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা ঢাবিতে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটির চারুকলা বিভাগের চিত্রপ্রদর্শনী শুরু গণঅভ্যুত্থানে হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে জুবায়েদ হত্যার ঘটনায় তার ছাত্রী আটক, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ পরিমাপের ক্ষেত্রে মানসম্মত পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম: প্রধান উপদেষ্টা গাজীপুরে ১৫১ পরিবারের মাঝে ছাগল ও উপকরণ বিতরণ কাপাসিয়ায় নদীতে কচুরিপানা ফেলতে গিয়ে এক নারীর মৃত্যু,অপর একজন নিখোঁজ জাপানের এনইএফ বৃত্তি পেল গাকৃবির ২০ শিক্ষার্থী বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড: ‘নাশকতার’ প্রমাণ খুঁজছে সরকার পূর্বাচল নতুন শহরে ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগ ও পুলিশ ব্যারাক উদ্বোধন

ভোটে অবহেলা-অনিয়মের শাস্তি বাড়লো, মতবিরোধে প্রাধান্য পাবে ইসি

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৩২ ভিজিটর

স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করা হয়েছে।

ভোটে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অনিয়মকারী নির্বাচন কর্মকর্তাদের শাস্তি নিশ্চিতে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং নিজস্ব কর্মকর্তাদের নিয়োগে নির্বাচন কমিশন সার্ভিসের বিধান রেখে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ শীর্ষক এই দুটি অধ্যাদেশ জারি হয়েছে। রোববার (৫ অক্টোবর) এ দুটি অধ্যাদেশের গেজেট জারি করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৮ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০০৯ সালের আইন সংশোধন করে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ ও ১৯৯১ সালের নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়। রাষ্ট্রপতির সইয়ের পর তা অধ্যাদেশ আকারে জারি হলো।

নির্বাচন কর্মকর্তাদের শাস্তি, সরকার ও ইসির ভিন্নমতে প্রাধান্য ইসির

নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা ‘নির্বাচনী কর্মকর্তাদের’ মধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে অধ্যাদেশে। সেই সঙ্গে দায়িত্বে অবহেলা, শাস্তির পরিধি ও কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পাশাপাশি সরকার ও ইসির মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রাধ্যান্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

অধ্যাদেশে নির্বাচন কর্মকর্তা বলতে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব বা কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি বা নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তি বা রিটার্নিং অফিসার বা ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাও (যেমন- প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার বা আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য) বোঝানো হয়েছে।

কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কমিশন বা কমিশন কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা, ক্ষেত্রমতো রিটার্নিং অফিসারের কোনো আদেশ বা নির্দেশ পালনে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যর্থ হলে বা অস্বীকৃতি প্রকাশ করলে বা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো আইনের বিধান ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন করলে বা সেটির অধীন কোনো অপরাধ করলে বা কর্তব্যে অবহেলা করলে তিনি অসদাচরণ করেছেন বলে গণ্য হবে এবং অসদাচরণ তার চাকরিবিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ মর্মে বিবেচিত হবে।

অসদাচরণ করলে তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্ত করতে পারবে বা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে পারবে বা তার পদাবনতি করতে পারবে বা তার পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি অনধিক ২ (দুই) বছরের জন্য স্থগিত রাখতে পারবে।

অসদাচরণ করলে কমিশন বা কমিশনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা ক্ষেত্রমতো কমিশনের সম্মতিক্রমে রিটার্নিং অফিসার তাকে, তার বিরুদ্ধে তজ্জন্য তার চাকরিবিধি অনুযায়ী শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহণ সাপেক্ষে অনধিক ২ (দুই) মাসের জন্য সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্তের আদেশ দিতে পারবেন এবং ওই বরখাস্তের আদেশ তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তার চাকরিবিধি অনুযায়ী প্রদত্ত হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং তদনুযায়ী কার্যকর হবে।

অসদাচরণের জন্য কোনো নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে কমিশন বা কমিশন কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা ক্ষেত্রমতো কমিশনের সম্মতিক্রমে রিটার্নিং অফিসার ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করলে ওই কর্তৃপক্ষ প্রস্তাব প্রাপ্তির ১ (এক) মাসের মধ্যে ওই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করবে এবং তৎসম্পর্কে কমিশনকে অবহিত করবে।

কমিশনের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে যেরকম কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তা ওই কর্মকর্তা বা ব্যক্তির ব্যক্তিগত নথি, চাকরি বই এবং বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনে লিপিবদ্ধ ও ডোসিয়ারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং তা সম্পর্কে কমিশনকে অবহিত করতে হবে।

সরকার এবং কমিশনের মধ্যে এই ধারার কোনো বিধান সম্পর্কে ভিন্নমত দেখা দিলে সে বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রাধান্য পাবে।

কমিশনের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্তব্যে অবহেলা করেছেন, তাহলে ওই কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কমিশন প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

এই বিধান লঙ্ঘন করলে তা হবে একটি অপরাধ এবং এজন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ (এক) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

কমিশনের আদেশ প্রতিপালন না করলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বছর এবং অন্যূন ১ (এক) বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সবশেষ ২০২২ সালের অক্টোবরে গাইবান্ধা-৫ উপ নির্বাচনের পর ভোটে অনিয়মে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি তৎকালীন ইসি। এবার আইন সংশোধনের পর আগামীতে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পথ প্রশস্ত হলো।

ইসি সার্ভিস চালুর অধ্যাদেশ

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ নামে আলাদা একটি সার্ভিস রাখার বিধান করে জারি হয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫।

এর মধ্য দিয়ে ইসি কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণ হলো। কারণ সংশোধিত আইন কার্যকর হলে ইসি সচিবালয়ের নিজস্ব কর্মকর্তারাও পদোন্নতি পেয়ে সচিব হওয়ার সুযোগ পাবেন।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন, ২০০৯ এর সংশোধনীতে ৫ নং আইনের ধারা ৩ এর উপ-ধারা (৪) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা ‘(৪) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য নির্বাচন কমিশন সার্ভিস নামে একটি সার্ভিস থাকবে’ প্রতিস্থাপিত হয়।

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Comments are closed.

এই বিভাগের আরও খবর