বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন: জার্মান রাষ্ট্রদূত হ্যাকিং রোধে ব্যবহারকারীকেই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে: ভূমি সচিব মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে তরুণ নিহত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে পশ্চিম তীর দখলে আইন পাসের পথে ইসরায়েল শরীরে ব্যথা অনুভব করলে রাসুল (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে কালিগঞ্জে র‌্যালি ও আলোচনা সভা গাজীপুরের কালীগঞ্জে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ প্রবাসীদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে ভোট দেওয়ার অ্যাপ সেন্টমার্টিনে নভেম্বরে রাত্রিযাপন করা যাবে না গাজীপুরের কাপাসিয়ায় জামায়াতের উদ্যোগে ছয়টি অজুখানা উদ্বোধন

আশেপাশের দেশের তুলনায় আমাদের রাস্তা নির্মাণের ব্যয় অনেক বেশি: সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫
  • ২৫ ভিজিটর
????????????

স্টাফ রিপোর্টার: বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আশেপাশের দেশের তুলনায় আমাদের রাস্তা নির্মাণের ব্যয় অনেক বেশি, এগুলো কমাতে হবে। আপনারা জানেন যে রাস্তাঘাট দুর্নীতির একটা বড় ক্ষেত্র। এই দুর্নীতি কমালে এবং আমাদের প্রকৌশলীরা যদি দেখেন তাহলে এইটাকে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ রাস্তা নির্মাণের ব্যয় কমানো সম্ভব। সড়কের উপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে হবে। অন্যান্য যেসব যাতায়াতের মাধ্যম রেল পথ, নদী পথ এবং বিমান এসবের ব্যবহার বাড়াতে হবে।

তিনি রোববার সকালে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় ভোগড়া থেকে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার ঢাকা বাইপাস সড়কের ১৮ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে দক্ষ প্রকৌশলী না থাকায়, বাইরে থেকে লোক এসে সড়ক-রেলপথ বানিয়ে দিয়ে যায়।  অথচ আমাদের দেশের বুয়েট থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার ইঞ্জিনিয়ার বের হয়। এটা অনেক লজ্জার বিষয়। সুতরাং বিদেশিদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশে দক্ষ প্রকৌশলী তৈরীর চেষ্টা করতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ এহছানুল হক, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীনসহ প্রকল্পের দেশী বিদেশী কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা শহরে এ ধরনের বাইপাস আমাদের করতে হবে। যাতে বড় শহরকে যানজট থেকে মুক্ত করতে পারি। সড়ক নির্মাণের ব্যয় কমাতে হবে এবং টেকনোলজি সেটা কমাতে হবে, পরিবর্তন করতে হবে, যাতে বছর বছর রাস্তা খারাপ না হয়ে যায়। আমাদের এখানে চীনের ঠিকাদার কাজ করতেছে। আর কতকাল বাইরে থেকে লোক এসে আমাদের সড়ক বানিয়ে দিয়ে যাবে। আর কতকাল বাইরে থেকে লোক এসে আমাদের রেলপথ বানিয়ে দিয়ে যাবে? তাহলে আমাদের এত ইঞ্জিনিয়ার থেকে লাভ কি? এত প্রকৌশলী থেকে লাভ কি ?

উপদেষ্টা আরো বলেন, আমাদের অন্যান্য যে যাতায়াতের মাধ্যম আছে যেমন- নদীপথে যাতায়াত করা, রেলওয়ে যাতায়াত করা ও বিমানে যাতায়াত করা এগুলোকে আমরা অবহেলা করেছি। আমরা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে আমরা এখন উদ্যোগ নিয়েছি। মাল্টি লেভেল প্ল্যান আমরা করতেছি। এই প্ল্যানের মধ্যে আমরা সবকিছু একত্রে দেখব। সড়ক পথ, রেল পথ ও নদী পথকে দেখব। সবগুলো আমরা একত্রে করবো। যেখানে যেটা উপযুক্ত সেখানে সেটার উপর জোর দিব। যেখানে নদীপথে মুভমেন্ট সহজ হবে সেখানে নদীপথের উপর জোর দেওয়া হবে। যেখানে রেলের জন্য সহজতর হবে সেখানে রেলের জন্য জোর দেওয়া হবে। শুধুমাত্র সড়কের উপর নির্ভরতা এটা আমাদের কমাতে হবে। প্রত্যেক দিনই জমি অধিগ্রহণ এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। এজন্য এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে নিজেরা একটা রাস্তা করে দেখান। নিজেরা একটা পাওয়ার প্লেন করে দেখান। নিজের একটা ট্রান্সমিশন লাইন করে দেখান। বিদেশীদের নির্ভরতা থেকে আমাদের মুক্ত হয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য, গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস থেকে নারায়নগঞ্জের মদনপুর পর্যন্ত  ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের মে মাসে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং পুরো এক্সপ্রেসওয়ে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উদ্বোধন করা ১৮ কিলোমিটার অংশে আংশিকভাবে টোল আদায় শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা ও গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক্সপ্রেসওয়েতে সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, একইসঙ্গে এই অংশে কোনো ইউটার্ন রাখা হয়নি। যানবাহনের ধরন অনুযায়ী টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।

এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ জানান, আংশিক চালুর ফলে রাজধানীর আশেপাশে যানজট উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। পণ্য পরিবহন আরও দ্রুত, সাশ্রয়ী ও কার্যকর হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুরো এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে এটি উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনের জন্য একটি বিকল্প ও নির্ভরযোগ্য রুট হিসেবে কাজ করবে। এতে যানজট কমার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ঢাকার ভেতরে প্রবেশ না করেই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী অভিমুখী যানবাহন দ্রুত যাতায়াত করতে পারবে। এতে ঢাকার যানজট কমবে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস পাবে এবং পণ্য পরিবহনে সময় ও ব্যয় সাশ্রয় হবে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার যানবাহন ঢাকা বাইপাস সড়ক ব্যবহার করছে, যার ৬০% পণ্যবাহী ট্রাক ও ট্রেইলার। প্রকল্প পুরোপুরি চালু হলে এ সংখ্যা বহুগুণে বাড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

 

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Comments are closed.

এই বিভাগের আরও খবর