বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১২ পূর্বাহ্ন

শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কমিশন গঠন করবে বিএনপি: তারেক রহমান

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৫৭ ভিজিটর
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান/ ফাইল ছবি

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই সঙ্গে কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকীকরণে শিক্ষা সংস্কার কমিশন করার কথাও জানান তিনি।

তারেক রহমান বলেন, শিক্ষকতা পেশা কখনো উপায়হীন বিকল্প বা সাধারণ চাকরির মতো হতে পারে না। সবচেয়ে মেধাবী মানুষ যেন শিক্ষকতা পেশাকে প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে বেছে নিতে পারে সে বিষয়ে বিএনপি পরিকল্পনা করেছে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিক্ষক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী এতে অংশগ্রহণ করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে অবশ্যই রাষ্ট্রের সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বাড়ানো কিংবা চাকরি স্থায়ী করা কিংবা জাতীয়করণের বিষয়টি ইতিবাচক বিবেচনার জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন করবো। একই সঙ্গে প্রচলিত শিক্ষা কারিকুলামকে ব্যবহারিক এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রধান করে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে শিক্ষা সংস্কার কমিশনও আমরা গঠন করতে চাই।

নৈতিকতা এবং ধর্মীয়-সামাজিক মূল্যবোধের আলোকে কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন এবং শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকীকরণ না করা গেলে বিশ্বে টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন হবেও মনে করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, দেশের শিক্ষকদের আর্থিক দিক থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সামাজিক সম্মান নিশ্চিত করে প্রতিযোগিতামূলক করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা আছে। দুর্নীতিবাজরা বিত্তবান হলে রাষ্ট্র ও সমাজের ভাবমূর্তি কমে, কিন্তু সমাজে শিক্ষকদের সম্মান অক্ষুণ্ন থাকলে সমাজের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পায়। রাষ্ট্রব্যবস্থায় দুর্নীতি নামক একটি ব্যাধি রয়েছে। সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় শিক্ষকরা সামাজিক বিপ্লব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন। আমি মনে করি এ ধরনের রাষ্ট্রীয় দিবসগুলোতে আমন্ত্রিত অতিথি তালিকায় অবশ্যই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের একজন করে শিক্ষক আমন্ত্রণ জানানো অত্যন্ত জরুরি। কারণ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় শিক্ষকদের দেখলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি।

শিক্ষকদের সব ন্যায্য দাবির সঙ্গে বিএনপি নীতিগতভাবে একমত জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক সংস্কার কিংবা নাগরিক উন্নয়নে আমরা যত উদ্যোগই গ্রহণ করি না কেন- শিক্ষা ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ এবং শিক্ষকদের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না।

তিনি বলেন, বিশ্ব এখন আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্সের যুগে প্রবেশ করেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে সমান এবং মর্যাদার সঙ্গে একটি প্রভাবশালী জাতি রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকাই আমাদের সামনে এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদেরকে অর্থ-বিত্তে, মেধা-মননে, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হতেই হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র এবং সমাজ। দেশের শিক্ষকরাই হচ্ছেন জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র-সমাজ গড়ার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। সুতরাং এই হাতিয়ার যদি দুর্বল হয় তাহলে রাষ্ট্রকে শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড় করানো সম্ভব নয়।

তারেক রহমান আরও বলেন, প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি এমপিও কিংবা নন-এমপিও সবমিলিয়ে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমবেশি প্রায় ৯৫ হাজার। এরমধ্যে সম্ভবত সম্পূর্ণ এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৬ হাজারের বেশি। জনসংখ্যার তুলনায় দেশের বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই সংখ্যাকে হয়তো বেশি বলা যাবে না। কিন্তু আমাদের বিদ্যমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর গুণগতমান নিশ্চিত করতেই হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই সমাবেশে আপনাদের অনেকের বক্তব্যে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের প্রসঙ্গ এসেছে। কেউ কেউ আরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করার কথা বলেছেন। এ ছাড়াও আপনাদের এই সংগঠনের বাইরেও বেসরকারি শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি রয়েছে। দেশের একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে নীতিগতভাবে অবশ্যই একমত।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র-রাজনীতি এবং সরকারের উন্নয়নে বিএনপির নেওয়া সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন। প্রয়োজন দেশের সবচেয়ে সচেতন অংশ শিক্ষকদের সমর্থন। একটি জ্ঞান এবং মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র এবং সরকার গঠনে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি আপনাদের সমর্থন এবং সহায়তা চায়।

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Comments are closed.

এই বিভাগের আরও খবর