স্টাফ রিপোর্টার : গাজীপুরের টঙ্গী, জয়দেবপুর ও শ্রীপুর উপজেলায় নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা। এসময় কারখানায় ভাংচুর, মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন দাবি জানানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৫টি কারখানায় একদিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকদের আন্দোলন শুরু হয়। দুপুরের পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
পুলিশ ও কারখানা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে গাজীপুরের টঙ্গীতে ১৩ দফা দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে এমট্রানেট গ্রুপ নামের কারখানার শ্রমিকরা। তাদের সাথে আন্দোলনে অংশ নেয় পিনাকি গ্রুপ, ড্রেস ম্যান ও নোমান গ্রুপের শ্রমিকরা।
এসময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শ্রমিক অংশ নেয়। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ, পুলিশ আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সাথে বৈঠক করে তাদের দাবি মেনে নেন।
শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার পর এমট্রানেট গ্রুপের মানব সম্পদ কর্মকর্তা সুজন, লাকি, সফিউল্লাহ, সুমন, পিএম মো. রানা, রফিক, সুপারভাইজার মুসা, নিলুফা, শান্তা, পিএম ফরিদ ও ওয়াহিদের পদত্যাগের দাবিতে দুপুর ৩টার পর থেকে আবারও আন্দোলনে নামে শ্রমিকরা।
টঙ্গীর এমট্রানেট গ্রুপের শ্রমিক মো: রফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের দাবি গুলো কয়েক বছর যাবৎ মৌখিক ও লিখিত ভাবে উপস্থাপন করে আসছি। মঙ্গলবার সকালে আমরা পাঁচটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা একত্রে মিলে আমাদের দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন করছি।
অপরদিকে, মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকার মেঘনা গ্রুপের হাই ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকরা ১৪দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এসময় পাশ্ববর্তী হাউ আর ইউ টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকদের বের করে আনতে গেলে হামলার শিকার হন হাই ফ্যাশনের শ্রমিকরা। এসময় উত্তেজিত শ্রমিকরা হাউ আর ইউ টেক্সটাইল এ ঢুকে ভাংচুর চালায়।
এদিকে, জেলার জয়দেবপুর থানার নতুন বাজার এলাকার এসএম নীটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় কারখানা প্রবেশ করে হাজিরা বোনাসসহ ১০ দফা বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়। পরবর্তীতে অ্যাসরোটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা বেলা ১২টার দিকে কারখানার প্রধান গেটে ইট পাইকেল ছুঁড়তে থাকে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হলে এসএম নীটওয়্যার ও অ্যাসরোটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা এ্যাপারেলস্-২১ লিঃ ও গ্রীণ ফাইবার কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার গেটে গেলে কারখানা কর্তৃপক্ষ ওই দুটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেন। পরে বেলা ১টার দিকে শ্রমিকরা যার যার অবস্থান থেকে সরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের এসপি সারোয়ার আলম বলেন, সকাল থেকে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা নানা দাবী নিয়ে ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সাথে আলোচনার পর দুপুরের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে শ্রমিক উত্তেজনা যাতে অন্যান্য কারখানায় ছড়িয়ে না পরে সেটি বিবেচনায় ২৫টি কারখানায় একদিনের জন্য ছুটি ঘোষনা করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাঠে রয়েছে শিল্প পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি।
####