ডাক্তাররা বলতে পারছেন না গুলিগুলো বের করা যাবে কিনা

১৬ই জুলাই দিনটি কখনই ভুলতে পারব না। সেই বিভীষিকাময় দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো শিউরে ওঠে গা, চোখের সামনে ভেসে ওঠে আবু সাঈদের মুখখানা, আরো ভেসে ওঠে শত শত ছাত্রের আর্তচিৎকার, রংপুর মেডিকেলের ৬নং ওয়ার্ড, আমার রক্তে ভেজা শার্ট, পুলিশের পাশবিকতা। এদিন রংপুর খামার মোড়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের জন্য কয়েক হাজার শিক্ষার্থীসহ আমরা জড়ো হই। দুপুরের খাঁ খাঁ রোদের মধ্য দিয়েই আমাদের মিছিলটি একপর্যায়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যায়। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেইটের (বর্তমানে শহীদ আবু সাঈদ গেইট) সামনে যায়, তখন পুলিশি বাধা শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি করে। শুরু হয় প্রাণ বাঁচানোর ভয়ে বিক্ষিপ্তভাবে ছুটাছুটি। চারদিকে টিয়ারশেলের ধোঁয়া, গুলির মুহুর্মুহু শব্দ, আহতদের আর্তনাদ। আমিও ছিলাম তাদেরই একজন, যারা প্রাণের ভয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিল। ঠিক তখন পেছন থেকে কিছু একটা এসে আমার মাথায়, ঘাড়ে, কানে লাগে। রক্ত গড়িয়ে পড়তে পড়তে সাদা শার্ট রক্তিম বর্ণ ধারণ করে। দুই চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিল। নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পর অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়ি। রংপুর মেডিকেলে ভর্তির পর জানতে পারি ১২টা ছররা গুলি লেগেছে। কিছু গুলি কান ছিদ্র করে বেরিয়ে গেছে, কিছু গুলি মাথা ও ঘাড়ে ঢুকে আছে। এ ব্যথায় অনেকদিন বসে বসে রাত কাটাতে হয়েছে। চিকিৎসার জন্য কয়েকজন ডাক্তারকে দেখিয়েছি। তারা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না অপারেশন করে গুলিগুলো বের করা যাবে কিনা। মধ্যবিত্ত পরিবার হওয়ায় এখনো সার্জারি করানো হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসার জন্য সহায়তা পাইনি।

তৌহিদুল ইসলাম তুহিন