স্টাফ রিপোর্টার : গাজীপুরে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং হাজিরা বোনাস ও বেতনভাতা বাড়ানোসহ বেশ কিছু দাবিতে বিক্ষোভ করেছে তিনটি কারখানার শ্রমিকরা। এসময় যমুনা গ্রুপের একটি কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে। শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় কয়েকটি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। বুধবার কোনাবাড়ি ও কালিয়াকৈর থানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানায়, বকেয়া বেতন এবং বেতন, টিফিনের টাকা বৃদ্ধির দাবিতে মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকার যমুনা গ্রুপের যমুনা ফ্যান কারখানার শ্রমিকরা বুধবার বিক্ষোভ করেছে। এসময় শ্রমিকরা কোনাবাড়ি-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে।
জিএমপি’র কোনাবাড়ি থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম এবং স্থানীয়রা জানান, যমুনা ফ্যান কারখানার শ্রমিকদের গত সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বকেয়া ছিল। বুধবার সকালে তারা কারখানায় গিয়ে ওই বেতন পরিশোধ এবং বেতনবৃদ্ধি, টিফিনের টাকা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা কারখানার পাশের জরুন এলাকায় কোনাবাড়ি-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে। এসময় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে কোনাবাড়ি থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করে এবং বিষয়টি সমাধানে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেন।
ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নিলে তারা ১০টার দিকে সড়ক থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এদিকে, কালিয়াকৈরের তেলিচালা এলাকার পূর্বাণী গ্রুপের করিম টেক্সটাইলের শ্রমিকরা হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল, বাৎসরিক বেতন বাড়ানোসহ প্রায় ২৬-২৭টি দাবিতে বুধবার সকাল থেকে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় তাদের সঙ্গে একই প্রতিষ্ঠাণের পূর্বাণী ফেব্রিক্স লিঃ, পূর্বাণী ইয়ার্ণ ডায়িং লিঃ কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলনে যোগ দেয়। একপর্যায়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে মালিক পক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের দাবির বিষয়গুলো আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেন।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, পূর্বানী গ্রুপের শ্রমিকরা গত দুদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন। বুধবার সকালে তারা ফের বিক্ষোভ শুরু করলে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করে। শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় পাশর্^বর্তী লগোজ এ্যাপারেলস লিঃ, এটিএস এ্যাপারেলস লিঃ, বে-ফুটওয়্যার লিঃ মিয়াগো বাংলাদেশ লিঃ এদিন ছুটি ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও প্রায় একই দাবিতে এদিন বিক্ষোভ করেছে নায়াগ্রা কারখানার শ্রমিকরা।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, বিভিন্ন কারণে গাজীপুরের নয়টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে তিনটি কারখানা চালু হলেও আজ বন্ধ রয়েছে ছয়টি কারখানা।